চুঁচড়ায় বিরল রোগে আক্রান্ত সন্তানের চিকিৎসার জন‍্য সাহায‍্যের আশায় অসহায় বাবা - মা

18th May 2020 হুগলী
চুঁচড়ায় বিরল রোগে আক্রান্ত সন্তানের চিকিৎসার জন‍্য সাহায‍্যের আশায় অসহায় বাবা - মা


নিজস্ব সংবাদদাতা ( চুঁচড়া ) : অপারেশনের জন্য হাতে আছে মাত্র দেড় মাস। হুগলির চুঁচুড়ায় বিরল অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন করলেন তার বাবা। এই রোগের ফলে রক্তে অনুচক্রিকা দ্রুত কমে যায় এবং অস্থিমজ্জায় হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। চিকিৎসার জন্য খরচ তিরিশ লক্ষ টাকা।
চুঁচু্ড়া আখনবাজারের বাসিন্দা অঞ্জন ঘোষ ও সঙ্গীতা ঘোষের একমাত্র মেয়ে অদ্রিজা। পাঁচ বছর বয়সে তার শরীরে অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া ধরা পড়ে। ২০১৭ মার্চ মাসে শরীরে কালো রঙের র‍্যাশ দেখা যায়। তখন চুঁচু্ড়ায় স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মেয়েকে। সেই চিকিৎসকের পরামর্শেই তাকে কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয় অদ্রিজার। ঠিক কী থেকে এই উপসর্গ দেখা দিচ্ছে তা বোঝা না গেলেও কলকাতার চিকিৎসকরা জানান এটি জিনঘটিত কোনও সমস্যা হতে পারে।
এরপরে ভেলোরে ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগে দেখানো হয় অদ্রিজাকে। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান বিরল এক অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত অদ্রিজা। এই রোগে রক্তের প্লেটলেট অত্যধিক কমে যায়। অস্থিমজ্জায় (বোন ম্যারো) হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। কোনও কারণে রক্তপাত শুরু হলে বন্ধ হতে চায় না। এই পরিস্থিতে রক্ত দিয়ে হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখতে হয়। তবে তা বেশি দিন করা সম্ভব নয়। রক্তকোষ বদলে ফেলে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন (বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট) করলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারে অদ্রিজা। হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় তিরিশ লক্ষ টাকা খরচ হবে এই চিকিৎসার জন্য।ফিরে এসে কলকাতায় টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে দেখানো হয় অদ্রিজাকে। সেখানেও বলা হয় একই কথা। তিন মাসের মধ্যে করতে হবে অপারেশন। বেঙ্গালুরুতে নারায়ণা হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে সেখানে খরচ কিছুটা কম হবে বলে জানতে পারেন অঞ্জন ঘোষ। তবে এই মুহূর্তে সেখানে নিয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে। এক দিকে লকডাউন আর অন্য দিকে টাকার সমস্যা। অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে এখন গভীর দুশ্চিন্তায় অদ্রিজার মা-বাবা।কয়েক দিন আগে অদ্রিজার দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্তপাত শুরু হলে তা বন্ধ হতে চায়নি। তখন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রক্ত দিতে হয়। মাসে দু’বার রক্ত পরীক্ষা করতে হবে বলে জানান চিকিৎসকরা। এক বার রক্ত পরীক্ষার তারিখ দিয়েও তা বাতিল করে টাটা মেডিক্যাল। জানিয়ে দেয় এই সময়ে হাসপাতালে না যাওয়াই ভাল। অত্যধিক ওষুধ আর স্টেরয়েড সেবনে ওজন অত্যধিক বেড়ে গেছে অদ্রিজার। চন্দননগর অ্যান্টনি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছটফটে মেয়েটা বর্তমানে শয্যাশায়ী। মেয়েকে নিয়ে কখনও ভেলোর কখনও বেঙ্গালুরু আর কখনও কলকাতা দৌড়তে দৌড়তে বেসরকারি সংস্থার চাকরিটাও গেছে অঞ্জনের। যেটুকু যা কিছু জমানো টাকা ছিল তাও খরচ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসার টাকা কী ভাবে জোগাড় হবে তা তাঁদের জানা নেই। মেয়েকে সুস্থ করে তুলতে চান অসহায় মা-বাবা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদনে সাড়া দিয়ে কয়েক জন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।





Others News

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  নিম্ন চাপের জেরে শনিবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের।
জেলায় আলু চাষে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে কয়েক লক্ষ টাকার উপর বলে দাবি চাষীদের। ধান জমিতে যেমন ক্ষতির পাশাপাশি হুগলী জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি এবার আলু চাষে। চলতি বছরে বার বার নিম্নচাপ  চাপের জেরে যেভাবে ধান চাষ পিছিয়ে ছিল ঠিক আলু চাষও পিছিয়ে ছিল প্রায় পনোর দিন। তবে গত শুক্রবার পযন্ত হুগলী জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বসানো হয়ে গিয়েছিল আলু এবং ৬০ শতাংশ জমি আলু চাষ উপযোগী করে তুলে ছিলেন চাষীরা। ধান চাষের মত আলু চাষের শুরুতে এবার কাল হয়ে উঠলো অকাল বৃষ্টি। অকাল বৃষ্টির ফলে যে সব জমিতে ইতি মধ্যেই আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল, সেই সব জমিতে জল জমে থৈ থৈ করছে। ফলে জমিতে বসানো সমস্ত আলু বীজ পচে নষ্ট হতে বসেছে।  কারণ আলু বসানোর পর অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি দিন কোনো জলের প্রয়োজন পরে না আলু চাষের ক্ষত্রে।
এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ উপযোগী করে আলু বসানো পযন্ত চাষীদের খরচ পড়েছে প্রায় পনেরো হাজার টাকা অন্যদিকে আলু বসানোর আগে পর্যন্ত  এক বিঘা জমিকে  চাষ উপযোগী করে তুলতে খরচ পড়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ ইতি মধ্যে নিম্ন চাপের জেরে অকাল বর্ষণে হুগলী জেলার ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে লক্ষ  লক্ষ টাকার উপর। জেলায় আলু চাষের জমির পরিমান ৯০ হাজার হেক্টর জমি। সেমবার সকাল থেকেই  আলু জমি থেকে জল বের করে আলু বীজ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন চাষীরা। চাষীদের দাবি অকাল বর্ষণে একেবারে সর্বস্বান্ত  হয়ে পড়েছে। আবার নতুন করে আলু বসানো বা জমি তৈরি করে আবার আলু বসানো অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে আবহাওয়া উপযোগী হলে পুনরায় জমি আলু চাষের উপযোগী করে আলু বসাতে সময় লাগতে পারে পনেরো থেকে কুড়ি দিন। ফলে আলু চাষে ফলন যেমন কমবে খাবার আলুর জোগানেও পড়বে টান। আগামী দিনে ধানের ক্ষতির ফলে যেমন  চালের যোগান টান পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  ঠিক তেমনি আগামী দিনে খাবার আলুর জোগানেও টান পড়বে বলে মত চাষীদের।